নিজস্ব প্রতিবেদন:সচরাচর হেমন্তের পরেই আসে শীত।তবে এবার প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে একটু আগেই শীতের আগমন ঘটেছে। শীতের তীব্রতা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে।শীত এলেই প্রতিবছর নাম না জানা হাজারো পাখির আগমন ঘটে আমাদের দেশে।
আন্তর্জাতিকভাবে জলচর পাখির জন্য স্বীকৃত ২৮টি জায়গা বাংলাদেশের সীমানায় রয়েছে। শীত এলেই এসব এলাকার খাল-বিল, হাওর-বাওর, পুকুর, জলাশয় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এদের কলকাকলিতে। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসে নাম না জানা এসব পাখি। আমরা এদের অতিথি পাখি বলে থাকি।
শীতের তীব্রতা সইতে না পেরে অতিথি পাখিরা তুলনামূলক যে দেশে শীত কম সে দেশে চলে যায়। তাছাড়া তীব্র শীতে খাবারেরও অভাব দেখা যায়। অধিকাংশ সময় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে থাকে। সেই সাথে তুষারপাত। সব মিলিয়ে পাখিদের থাকা ও খাবার সংগ্রহ করা তুলনামূলক অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।
এসব পাখি আসে উত্তর মেরু, সাইবেরিয়া ইউরোপ, এশিয়ার কিছু অঞ্চল ও হিমালয়ের আশপাশের কিছু এলাকা থেকে।শীতের মৌসুমে আসা পাখিদের মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, পাতিহাঁস, লেজহাঁস, পেরিহাঁস, চমাহাঁস, জলপিপি, রাজসরালি, লালবুবা, পানকৌড়ি, বক, শামুককনা, চখপখিম সারস, কাইমা, শ্রাইক, গাঙ কবুতর, বনহুর, হরিয়াল, নারুন্দি, মানিকজোড়া অন্যতম।
প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ১৫ প্রজাতির হাঁস ছাড়াও গাগিনি, গাও, ওয়েল, পিগটেইল, থাম, আরাথিল, পেলিক্যান, পাইজ, শ্রেভির ও বাটান এসব পাখি এসে থাকে।প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশের পাখি দুই শ্রেণির। আবাসিক আর অনাবাসিক। অতিথি পাখি অনাবাসিক শ্রেণির আওতায় পড়ে। আবাসিক ও অনাবাসিক মিলে দেশে প্রায় ৬৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে।
যার মধ্যে ৩৬০ প্রজাতি আবাসিক। বাকি ৩০০ প্রজাতি অনাবাসিক। সব অনাবাসিক পাখি শীতের সময় আসে না। ৩০০ প্রজাতির মধ্যে ২৯০টি শীত মৌসুমে আসে ও ১০টি প্রজাতি থেকে যায়।পাখি শিকার করা একটি অত্যন্ত একটি খারাপ কাজ।যা আমরা অনেকেই জানিনা। আবার অনেকেই যেনও পাখি শিকার করতে যাই।কারণ আমরা যে পাখি গুলো মেরে ফেলি।
অনেক পাখীর বাসায় বাচ্চা ফোটানো থাকে। আবার অনেক পাখি হচ্ছে অতিথি পাখি। যখন আমরা একটা পাখিকে বন্দি করে ফেলি তখন সে পাখির বাচ্চার কি অবস্থা হয়।সে না খেয়ে বাসায় মারা যায়।আমরা মানুষ হয়ে যদি তাদের উপর অত্যাচার টা করি তাহলে এটা ভালো দেখায় না। তবুও সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। পাকিস্তানের একটি শহরের অনেক ছেলেরা তার বাজ পাখি দিয়ে পাখি শিকার করছে।
বাজপাখি এমন একটি সচরাচর দুর্দান্ত পাখি। তাদের শিকার কখনো মিস হয় না।পাকিস্তানের শহরের ছেলেগুলো বাজপাখি ছোটকাল থেকেই পুষে সে বড় করে। আসুন জেনে নিই বাজপাখি সম্পর্কে।ছোট পাখি ও ছোটখাটো অন্য জন্তু শিকারের জন্য অনেকে বাজপাখি পোষে। এ ধরনের শিকার প্রাচীন চীন, পারস্য ও মিশরের অধিবাসীরা জানত। পুরাকাল থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে এই চর্চা চলেছে।
এটি এশিয়া থেকে পূর্ব-ইউরোপ হয়ে পশ্চিম ইউরোপে পৌঁছয়। সতেরো শতকের পর এই শিকারে ভাটা পড়ে। শিকারি বানানোর জন্য বাচ্চা অবস্থা থেকে এদের অনেক দিন কঠোর ও অবিরাম প্রশিক্ষণ দিতে হয়। ধৃত শিকার এরা স্পর্শও করে না এবং শিকারির হাতে স্থির হয়ে বসে থাকে।কাকের আকারের এক বাজপাখি।
নেক উপরে উঠে চক্কর দিতে দিতে হঠাৎ ডানা ভাঁজ করে উড়ন্ত জলপিপি বা অন্য পাখিকে ছোঁ-মেরে ধরে। এদের গতি অত্যন্ত ক্ষিপ্র, শূন্যে ঘা মেরে শিকারকে কাবু করে এবং ছোঁ-মারার সময় গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) পর্যন্ত পৌঁছয়, যা পাখিদের মধ্যে দ্রুততম।
এ ধরনের শিকারে যতদিন রাজা-বাদশাহরা আকৃষ্ট ছিলেন ততদিন এটি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। আকারে স্ত্রী পাখির এক-তৃতীয়াংশ ছোট পুরুষপাখিকে শিকারিরা tercel বলে। স্ত্রী পাখিরা আকারে বড় ও চওড়া এবং শিকারিদের বেশি পছন্দসই।