বাস্তব জীবনে মানুষের সময় নেই অন্যের খবর নেওয়ার। সবাই ছুটছে নিজের মতো করে। সবাই সবার নিজের জীবন নিয়ে ব্যাস্ত। যত ব্যাস্ততা বাড়ছে ততই কমছে মানুষের একে অপরকে উপকার করার পরিমান। এখন রাস্তা ঘাটে বিপদে পড়লে পাওয়া যায়না উপকার বা সাহায্য। উপকার করার পরিবর্তে উল্টে মানুষ মুখ ফিরিয়ে চলে যায়।
কিন্তু এই স্বার্থপরতার যুগেও কিছু মানুষ এখনও এমন আছেন যারা অন্যকে সাহায্য করার মধ্যেই জীবনের স্বার্থকতা খুঁজে পান। আজ আপনাদের এইরকমই একটা গল্প শোনাবো যা আপনার চোখে জল এনে দেবে।ঘটনাটি ঘটেছিলো আজ থেকে বেশ কিছু বছর আগে। এক রিক্সাচালক এক ধনী পরিবারের মেয়ের নিত্য দিনের চালক ছিল। স্কুল থেকে শুরু করে টিউশন, সব জায়গাতেই মেয়েটিকে নিতে যেত সেই রিক্সাচালক। তার ওপরে দায়িত্ব ছিল মেয়েটিকে সঠিক সময়ে বাড়ি ফেরানোর।
একদিন মেয়েটি প্রতিদিনের মতই রিক্সায় চেপে যাচ্ছিলো, গল্পের শুরু সেখান থেকেই। সেদিন হঠাৎ সে রিক্সা থামিয়ে নেমে পড়ে। নেমে সোজা ছুটতে শুরু করে রেললাইনের দিকে। সে স্থির করেছিল আত্মহত্যা করার। কিন্তু তা হতে দেননি সেই রিক্সাচালক।
সেই আত্মহত্যার হাত থেকে সে বাঁচায় মেয়েটিকে এবং তাকে সুস্থভাবে বাড়ি পৌঁছে দেয়। তারপর কেটে গেছে কিছু বছর। পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুই। মেয়েটিও বড় হয়েছে এবং রিক্সাচালকও বৃদ্ধ হয়েছে। সেই বৃদ্ধ অবসর নিয়েছে নিজের কর্মজীবন থেকে।
বয়সের সাথে সাথে তাকে অসুস্থতা আপন করেছে। তিনি এখন হাসপাতালে শয্যাশায়ী। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে হঠাতই তিনি দেখলে পেলেন সেই মেয়েটিকে, যাকে তিনি একদিন মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন। সে এখন সেই হাসপাতালের ডাক্তার।
মেয়েটি তখন তাকে দেখে তার হাত ধরে ধন্যবাদ জানায় এবং বলে “আপনি সেদিন আমায় আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন বলেই আজ আমি একজন ডাক্তার হতে পেরেছি। জীবনের সব মর্ম আমি বুঝেছি। আপনার সমস্ত চিকিৎসার দায়ভার তাই এখন আমার”। একদিন বৃদ্ধটি মেয়েটির জীবন বাঁচিয়েছিল, আজ মেয়েটি তার বাকি জীবনের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে ঋণ শোধ করলো।
আজও পৃথিবিতে কিছু ভালো মানুষের অস্তিত্ব আছে, তাই জন্যই এখনও আমরা সমাজে ভালো ভাবে বেঁচে আছি। ভালো মন্দ সব মিলিয়েই আমাদের সমাজে চলতে হয়। সমাজে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটে, কিছু আমাদের চোখে পড়ে, আর কিছু থেকে যায় অজানা।